ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কেন করবেন

মানুষের চোখকে এখন নিয়ন্ত্রণ করছে মোবাইল, কম্পিউটার, সোশাল মিডিয়া। তাই ডিজিটাল মার্কেটিংই এখন সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।

আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং বা ইন্টারনেট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে চান? এখানে আমি বলব ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কেন এটি এত গুরুত্বপূর্ণ।  বিস্তারিত জানার আগে আসুন জানি, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ধারণা সম্পর্কে।

ধরুন, আপনি রাস্তা দিয়ে গাড়িতে চড়ে যাচ্ছেন, খেয়াল করে দেখুন আপনি কি রাস্তার পাশের বিলবোর্ডের দিকে কতক্ষণ তাকান আর আপনার মোবাইলের স্ক্রীনে কতক্ষণ সময় দেন। খুব সম্ভবত আপনি আপনার মোবাইলের স্ক্রীনেই বেশিরভাগ সময় দিচ্ছেন।

এখন কেউ আর বাইরে তাকায় না। মানুষের চোখকে নিয়ন্ত্রণ করছে মোবাইল, কম্পিউটার, সোশাল মিডিয়া। ভবিষ্যতে মানুষ তাদের প্রতিটি মিনিট ব্যস্ততার মধ্যে কাটাবে। তাই, পুরোনো বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ডে মার্কেটিং আর কার্যকরী থাকবেনা।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি

তাই মার্কেটিং হবে মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এটাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি

ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে বিভিন্ন ডিজিটাল চ্যানেল যেমন সার্চ ইঞ্জিন (Google Search), সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ, ওয়েবসাইট ও মোবাইল এপস এর মাধ্যমে পন্য বা সেবা বিক্রয়ের যাবতীয় কার্যক্রম।

অর্থাৎ, যেকোন ডিজিটাল ডিভাইস বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে মার্কেটিং করার কৌশলই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।

ডিজিটাল মার্কেটিং যে শুধু অনলাইনেই হবে তা নয়। এটি অনলাইন বা অফলাইন ২ ভাবেই হতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব

বর্তমানে ব্যবসা বাণিজ্য সহ প্রায় সব কার্যক্রমই পরিচালিত হচ্ছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস মাধ্যমে। এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছেই। আমরা আমাদের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছি মোবাইল ডিভাইস, ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়াতে।

এখন কেউ বড় বড় বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপন দেখে পন্য বা সেবা কিনতে উৎসাহিত হয়না। উৎসাহিত হওয়া অনেক পরের ব্যপার এই সময়ে কেউ বিলবোর্ডের দিকে সময় দিয়ে তাকায়ও না। যদিও এখনো অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিলবোর্ড আর টেলিভিশন বিজ্ঞাপন প্রতিযোগিতার মধ্যে রয়েছে, এটি খুব বেশিদিন চলবে না।

আপনি খেয়াল করে দেখুন অন্য যে কোন ট্র্যাডিশনাল বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে Google ও Facebook অনেক অনেক বেশি মুনাফা করছে। কেন করছে? কারণ এরা আপনার আমার চোখকে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে।

আপনি সারা দিনে, রাস্তার পাশের বিজ্ঞাপন ও টেলিভিশন দেখার চেয়েও ফেইসবুক, ইউটিউব ও গুগল সার্চে অনেকগুন বেশি সময় দিচ্ছেন। শুধুমাত্র এই কারণেই ডিজিটাল মার্কেটিং এত গুরুত্বপূর্ণ।

তাছাড়া, খুব কম সময়ে ও কম খরচে যে কোন এলাকার কাস্টমারের কাছে আপনি পৌছাতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার (Digital Marketing Channels)

কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায় তার সবগুলো পদ্ধতি বা মাধ্যম হল Digital Marketing Channels. ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সব চ্যানেলগুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়, অনলাইন ও অফলাইন। বর্তমানে অনলাইন পদ্ধতিগুলোই বেশি কার্যকরী ও ফলপ্রসু।

আমি সংক্ষেপে অনলাইন মার্কেটিংঅফলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যম গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

অনলাইন মার্কেটিং (Online Marketing)

অনলাইন মার্কেটিংয়ের ৭ টি জনপ্রিয় মাধ্যমগুলো হচ্ছে

  1. Search Engine Optimization (SEO)
  2. Search Engine Marketing (SEM)
  3. Social Media Marketing (SMM)
  4. Content Marketing
  5. Affiliate Marketing
  6. Pay-per-Click Advertising (PPC)
  7. Email Marketing

Search Engine Optimization (SEO)

মানুষ এখন যে কোন কিছু খুজতে Google Search, Yahoo Search ও Bing Search ইত্যাদি ব্যবহার করে। ক্লিনার দরকার? গুগলে সার্চ করুন “best cleaning service near me”। পেয়ে যাচ্ছেন লোকাল ক্লিনিং সার্ভিস গুলোর লিষ্ট।

Search Engine এ আমরা যা লিখে সার্চ করি তাকে Keyword বলা হয়। সার্চ করার পর ১০ টি ওয়েবসাইটের লিস্ট সহ যে পেইজ আসে তাকে Search Engine Result Page (SERP) বলা হয়।

রেজাল্ট পেইজে যে ওয়েবসাইট যত উপরে থাকে, আমাদের সে ওয়েবসাইটে ক্লিক করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

Search Engine Optimization হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে, কোন নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডের জন্য আপনার ব্যবসার ওয়েবসাইটকে SERP বা সার্চ রেজাল্ট পেইজের ১ম দিকে দেখানো চেষ্টা করা হয়। যাতে কোন ভিজিটর ওই কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে আপনার ওয়েবসাইটটি খুঁজে পাবে এবং আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানতে পারবে।

এটি বর্তমানে সবচেয়ে টেকসই ও স্বল্পব্যয়ী অনলাইন মার্কেটিং পদ্ধতি।

Search Engine Marketing (SEM)

উপরে আমি কিছু সার্চ ইঞ্জিনের কথা বলেছি। এসব সার্চ ইঞ্জিনগুলো অর্থের বিনিময়ে সার্চ রেজাল্ট পেইজের উপরের দিকে আপনার ওয়েবসাইট বা প্রোডাক্টয়ের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে। এটি এক ধরণের Paid Advertising.

ডিজিটাল মার্কেটিং কি

এ ধরণের মার্কেটিংয়ে ২টি মডেল রয়েছে, CPC (Cost Per Click) ও PPC (Pay per Click) Model.

  • CPC (Cost Per Click) – এই মডেলে, আপনি আপনার বিজ্ঞাপনে প্রতি ক্লিকের জন্য সর্বোচ্চ কি পরিমান ব্যয় করতে চান তা সেট করে দিবেন। এভাবে সর্বোচ্চ বিড যিনি করবেন তার বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে। Google Ads এর Keyword Planner tool থেকে বিভিন্ন কিওয়ার্ডের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সিপিসি (Lowest and Highest CPC) দেখতে পারবেন।
  • PPC (Pay per Click) – এই মডেলে, বিজ্ঞাপনে প্রতিটি ক্লিকের জন্যই আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ পরিশোধ করবেন। যখনি কোন ভিজিটর ক্লিক করবে, তখনি আপনার ব্যয় হবে।

এ ধরণের মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি খুব সহজে এবং কম সময়ে সম্ভাব্য কাস্টমারের কাছে পৌছাতে এবং বিক্রয় বাড়াতে পারবেন।

Content Marketing

ওয়েবসাইট, ব্লগ, ইউটিউব ও বিভিন্ন ফোরাম সাইটে আপনার পন্য বা সেবা নিয়ে মার্কেটিং করাই হচ্ছে Content Marketing । আপনার ব্র্যান্ড, পন্য বা সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, উপকারিতা, ব্যবহার বিধি ইত্যাদি তথ্য দিয়ে আকর্ষনীয়ভাবে বর্ণনা করে কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। তা হতে পারে, ব্লগ পোষ্ট, পন্যের রিভিউ, ডিজিটাল ও ভিডিও কনটেন্ট।

কনটেন্ট তৈরি করার ২টি উদ্দেশ্য হতে পারে – ১) পন্য বা সেবা সম্পর্কে অবহিত করা, ২) ক্রেতা বা কাস্টমারকে সাপোর্ট দেয়া।

আপনার নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগ, জনপ্রিয় ব্লগিং সাইট, রিভিউ ওয়েবসাইট,  ইউটিউব ও আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন ফোরামে আপনি কনটেন্ট পাবলিশ করে মার্কেটিং করতে পারেন।

Social Media Marketing (SMM)

Facebook, Instagram, Twitter, LinkedIn এর মত সোশ্যাল সাইটগুলোতে পেইড ও ফ্রি মার্কেটিং হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।

জুলাই ২০২১ পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪.৮ বিলিয়ন যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৬১%। আবার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারির সংখ্যা ৪.৪৮ বিলিয়ন যা মোট জনংখ্যার প্রায় ৫৭% (তথ্যসূত্র- Hotsuit Report)

বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইন্ডিয়া সহ সারা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াগুলো হচ্ছে, Facebook, Instagram, Whatsapp, Twitter ইত্যাদি। আমেরিকান দেশগুলোতে Twitter, Reddit, Pinterest  অধিক জনপ্রিয়।

সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার উপস্থিতি বা এক্টিভিটি কেমন, শুধু তা চিন্তা করলেই আপনি বুঝতে পারবেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব কেমন।

Affiliate Marketing

এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মডেলটি হচ্ছে, অন্য কারো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস আপনি মার্কেটিং করে বিক্রয় করবেন। প্রতিটি বিক্রয় থেকে আপনি একটি নির্দিষ্ট হারে এফিলিয়েট কমিশন আয় করতে পারবেন।

ধরুন, আমার একটি প্রোডাক্ট আপনি আপনার ওয়েবসাইট, ব্লগ বা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রমোট করবেন, আপনার প্রোমোট করা লিংক থেকে কোন কাস্টমার প্রোডাক্টটি ক্রয় করলে আপনি আপনাকে ক্রয়মূল্যের একটি নির্দিষ্ট % কমিশন হিসেবে প্রদান করব।

এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে, আমি পন্যের বিজ্ঞাপন না দিয়ে আপনার মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারছি। একইভাবে আপনিও আমার প্রোডাক্ট সেল করে আয় করতে পারছেন। এক্ষেত্রে আমার এবং আপনার ২ জনেরই সুবিধা হচ্ছে।

যে কোম্পানী বা ব্র্যান্ডের পন্য বিক্রয় করা হবে, সে ব্র্যান্ড বা কোম্পানী হচ্ছে বিজ্ঞাপনদাতা (Advertiser) এবং যারা এফিলিয়েশন করে পন্য বিক্রি করবেন তাদেরকে বলা হয় পাবলিশার (Publisher)

এফিলিয়েট মার্কেটিং যে প্রক্রিয়ায় কাজ করে:

  1. বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানীর সাথে পাবলিশারগণ এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে পার্টনারশিপ
  2. পাবলিশার/ এফিলিয়েট মার্কেটার সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে প্রোডাক্ট প্রোমোট করা
  3. সফলভাবে কোন পন্য বিক্রয়
  4. বিজ্ঞাপনদাতা পাবলিশারকে এফিলিয়েট কমিশন প্রদান

বিশ্বের বড় সব প্রতিষ্ঠানই যেমন, Amazon, Alibaba Themeforest, ebey তাদের পন্য বা সেবা বিক্রয়ের জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং অপশনটি ব্যবহার করছে।

Pay Per Click (PPC) Advertising

Google Ads বা Bing Ads এর মত Ad Network গুলো, তাদের সার্চ ইঞ্জিন, ইউটিউব বা থার্ড পার্টির বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। আপনার পন্য বা সেবার বিজ্ঞাপনের জন্য  দেখানোর জন্য, আপনি Ad Network গুলোকে অর্থ পরিশোধ করবেন।

এক্ষেত্রে, Pay Per Click এর মানে হচ্ছে ক্লিক প্রতি ব্যয়। অর্থাৎ, শুধুমাত্র বিজ্ঞাপনে কোন ভিজিটর ক্লিক করলেই আপনাকে নির্দিষ্ট হারে অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

আপনি যখন কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করছেন বা ইউটিউবে ভিজিট করছেন, আপনি এধরণের কিছু বিজ্ঞাপন হয়তো দেখে থাকবেন।

Email Marketing

সহজ ভাষায় ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে, আপনার পন্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিয়ে সম্ভাব্য কাস্টমারদের কাছে প্রমোশনাল ইমেইল পাঠানো। ইমেইল মার্কেটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, আপনার পন্য বা সেবা সম্পর্কে কাস্টমারকে অফার করা।

ইমেইল মার্কেটিং অনেক পুরোনো পদ্ধতি হলেও, ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলগুলোর মধ্যে এটি এখনো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও ব্যবহৃত। এটি জনপ্রিয় হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে।

SEO, SEM, SMM এ বিভিন্ন পলিসি ও Algorithm পরিবর্তনের ফলে, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিতে প্রভাব পড়ে। কিন্তু ইমেইল মার্কেটিংয়ে Algorithm ও policy পরিবর্তনের কোন প্রভাব নেই।

ইমেইল মার্কেটিংয়ে আপনার একটি এসেট ডেভেলপ হয়। যেমন আপনি সম্ভাব্য কাস্টমারদের যে ইমেইল লিস্ট সংগ্রহ করছেন তা আপনার একটি এসেট। আপনার পরবর্তী মার্কেটিং ক্যাম্পেইনে এটি আবার ব্যবহার করতে পারছেন।

এছাড়া, শুধুমাত্র একটি ইমেইল পাঠিয়েই কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনি লক্ষ লক্ষ সম্ভাব্য কাস্টমারের কাছে পৌছে যেতে পারছেন। এসব কারণে, এটি এখনো অনেক জনপ্রিয়।

আমরা সচরাচর যে ইমেইল ব্যবহার করি, যেমন, Gmail, AOL, Yahoo Mail এগুলোর দ্বারা ইমেইল মার্কেটিং করা যায় না। এখানে আপনি এক সাথে হাজার হাজার ইমেইল পাঠাতে পারবেন না। তাই ইমেইল সার্ভার ক্রয় করে ইমেইল মার্কেটিং করতে হয়।

অফলাইন মার্কেটিং (Offline Marketing)

এ ধরণের মার্কেটিং কৌশলগুলো অনেক আগ থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। তারপরও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কিছুটা আধুনিক ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে এ মাধ্যমগুলো আরো উন্নত হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি সংক্ষেপে উল্লেখ করছি।

LED Display Advertising

বড় শহরগুলোতে প্রিন্টেড বিলবোর্ডের পরিবর্তে এখন দেখা যাচ্ছে এলইডি ডিজিটাল বিলবোর্ড। এই বিলবোর্ডের সাহায্যে, ভিডিও বিজ্ঞাপন দেখানো সম্ভব। এ ধরণের বিলবোর্ড সাধারণ বিলবোর্ডের তুলনায় ক্রেতা আকৃষ্ট করতে অধিক সক্ষম।

বিশ্বের সব বড় শহর, যেমন Dubai, Newyork এর Time Square এর সব বিলবোর্ড ডিজিটাল বিলবোর্ড। সেখানে সাধারণ কোন বিলবোর্ড আপনার চোখে পড়বেনা।

Radio Marketing

আমাদের মোবাইল ডিভাইসেও রেডিও আছে। রেডিও প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে। এখন অনেক অনলাইন ভিত্তিক রেডিও স্ট্রিমিং চ্যানেলও রয়েছে।

আমাদের অনেকের রেডিও শোনার অভ্যাস আছে। এ সংখ্যাটি একদম ই অবহেলা করার মত নয়।

TV Marketing

Cable TV Channel এর পাশাপাশি এখন অনলাইন স্ট্রিমিং অনেক টিভি চ্যানেল আছে। TV একদম ই দেখেনা এমন মানুষ কমই আছে। অফলাইন মার্কেটিংয়ের মধ্যে এটি সবচেয়ে অধিক ব্যবহৃত পদ্ধতি।

Television Marketing হয়তো কখনোই বন্ধ হবেনা। প্রায় ২/৩ ভাগ মানুষ কোন না কোন TV বা লাইভ স্ট্রিমিং TV দেখে।

তবে Cable TV Channel গুলোর একটি সমস্যা হচ্ছে, ক্যাবল টিভিতে আপনি সঠিক কাস্টমারকে টার্গেট করে বিজ্ঞাপন দেখানো সম্ভব নয়। তাই ক্যাবল টিভি চ্যানেলে মার্কেটিং ফলপ্রসু নয় যার ফলে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট খুব কম বা শুন্য ও আসতে পারে।

Mobile Marketing (Call or SMS)

এখন সবার হাতেই রয়েছে মোবাইল ডিভাইস। সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে আপনি একটি ফোন কল বা মেসেজের মাধ্যমে আপনার পন্য বা সেবার অফার করতে পারেন। যদি আপনি ফোন ব্যবহার করে থাকেন, অবশ্যই এ ধরণের কল বা এসএমএস পেয়েছেন।

এসএমএম মার্কেটিং

যেভাবে, মোবাইল কোম্পানীগুলো তাদের বান্ডেল ও মিনিট অফার দিয়ে আপনাকে এসএমএস পাঠায়, এভাবে আপনিও আপনার পন্য বা সেবা ও অফার জানাতে এসএমএস পাঠাতে পারেন।

মোবাইল মার্কেটিং বর্তমানে একটি বহুল ব্যবহৃত ও বৈধ মার্কেটিং চ্যানেল।

বিভিন্ন মাধ্যমে সম্ভাব্য ক্রেতার ফোন নম্বর সংগ্রহ করা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাস্টমারকে কল বা এসএমস পাঠানোর জন্য অটোমেটেড কোন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।

যখন কোন ব্যক্তিকে সরাসরি ফোন বা এসএমএস পাঠানো হয়, এটি ইমেইল মার্কেটিং এর চেয়ে অধিক কার্যকরী। কারণ ইমেইলের চেয়েও এসএমএস পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

খুব বেশি পরিমাণে বাল্ক এসএমএস পাঠানো জন্য আপনাকে এসএমএস সার্ভার ভাড়া নিতে হবে। তারপর সেখানে আপনার কাস্টমারের মোবাইল নম্বরের লিষ্ট আপলোড করে এক ক্লিকে হাজার হাজার এসএমএস পাঠাতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন শিখবো?

যদি আপনার কোন ব্যবসা থাকে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে নিজের ব্যবসায়ের উন্নতি করতে পারবেন। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্যবসায় টিকিয়ে রাখতে এই স্কিলের কোন বিকল্প নেই।

আবার যদি আপনি ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে কাজ করতে চান, তাও আপনি শিখতে পারেন। ভবিষ্যতে যে স্কিলগুলোর বেশি চাহিদা থাকবে তার মধ্যে এটি অবশ্যই উপরের দিকে থাকবে। বর্তমানে প্রতিষ্টিত এবং সনামধন্য সব প্রতিষ্ঠানই ডিজিটাল মার্কেটিং করছে। এসব প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে অনেক ডিজিটাল মার্কেটার ভাল বেতন দিয়ে নিয়োগ করেছে। ভবিষ্যতে চাকরীর ক্ষেত্রেও এর অনেক চাহিদা তৈরি হবে।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে মার্কেটিং রিলেটেড অসংখ্য কাজ রয়েছে। মার্কেটপ্লেসে যা কাজ আছে তার প্রায় অর্ধেকই ইন্টারনেট মার্কেটিং রিলেটেড। Upwork, Fiverr এ Freelancer হিসেবে কাজ করেও আপনি আয় করতে পারবেন।

তাছাড়া নিজের একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি করেও স্বাধীনভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিংয়ের কাজ করতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং জানলে, আপনিতো আপনার নিজেরই মার্কেটিং করতে পারবেন। তাহলে কেন চাকরী বা ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে। আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করুন। অন্য ব্রান্ড বা কোম্পানীর প্রোডাক্ট মার্কেটিং করে সেল করুন। ডিজিটাল মার্কেটারদের ৯৫% এটাই করে। এটিই একমাত্র আয়ের উৎস যেখানে ঘুমিয়ে থেকেও আয় করা সম্ভব।

আমি চাই আপনিও অনলাইন থেকে আয় করুন। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং ও ব্লগিং নিয়ে আমি নিয়মিত এই ব্লগে লিখব। সুস্থ থাকুন ও পাশে থাকুন।